কম্পিউটার স্লো হওয়ার পাঁচটি সাধারণ কারণ হলো:


  1. অতিরিক্ত স্টার্টআপ প্রোগ্রাম: কম্পিউটার চালুর সময় অনেক প্রোগ্রাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়, যা র‍্যামের উপর চাপ ফেলে এবং কম্পিউটারকে স্লো করে দেয়। অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামগুলি স্টার্টআপ থেকে সরানো প্রয়োজন।

  2. ডিস্ক স্পেস পূর্ণ হয়ে যাওয়া: হার্ড ডিস্কে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা না থাকলে সিস্টেম স্লো হতে পারে। ডিস্কের নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা খালি রাখা সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

  3. অপ্রয়োজনীয় ফাইল এবং ক্যাশ: বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন এবং ব্রাউজারে জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় ফাইল এবং ক্যাশ মেমোরি কম্পিউটার স্লো করে দেয়। এগুলো নিয়মিত ক্লিন করা প্রয়োজন।

  4. ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার আক্রমণ: কম্পিউটারে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার থাকলে এটি স্লো হতে পারে। ভালো একটি অ্যান্টি-ভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহার করে নিয়মিত স্ক্যান করা উচিত।

  5. পুরনো বা অপর্যাপ্ত হার্ডওয়্যার: র‍্যাম, প্রসেসর বা হার্ড ড্রাইভ পুরনো হয়ে গেলে বা এর ধারণক্ষমতা কম হলে এটি কম্পিউটারের গতি কমিয়ে দিতে পারে। হার্ডওয়্যার আপগ্রেডের মাধ্যমে পারফরমেন্স উন্নত করা সম্ভব।


পুরনো বা অপর্যাপ্ত হার্ডওয়্যার বুঝার লক্ষণ ও পদ্ধতি

লক্ষণ বা পদ্ধতি বিবরণ
ধীর পারফরম্যান্স কম্পিউটার ধীরগতির হলে এটি র‌্যাম, প্রসেসর বা স্টোরেজের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে নতুন সফটওয়্যার চালাতে সমস্যা হলে এটি পুরনো হার্ডওয়্যার নির্দেশ করতে পারে।
সিস্টেম ক্র্যাশ এবং ফ্রিজ হওয়া প্রায়ই ক্র্যাশ বা হ্যাং হলে র‌্যাম বা প্রসেসরের সমস্যা থাকতে পারে। এছাড়া হার্ড ড্রাইভের সমস্যা থাকলে ফাইল এক্সেস করতে সমস্যা হতে পারে।
নতুন সফটওয়্যার চালাতে অক্ষমতা আধুনিক সফটওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেমের জন্য উচ্চতর প্রসেসর, বেশি র‍্যাম, বা দ্রুত হার্ড ড্রাইভ প্রয়োজন হয়। এগুলো সাপোর্ট না করলে আপনার হার্ডওয়্যার পুরনো হতে পারে।
হার্ডওয়্যার পরীক্ষা র‍্যাম, হার্ড ড্রাইভ, এবং প্রসেসরের বিভিন্ন টুল (যেমন MemTest86, CrystalDiskInfo) ব্যবহার করে হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করা যেতে পারে।
টাস্ক ম্যানেজারে পর্যবেক্ষণ টাস্ক ম্যানেজার দিয়ে CPU, র‍্যাম এবং ডিস্কের ব্যবহারের হার পর্যবেক্ষণ করলে অতিরিক্ত লোড বোঝা যায়।
কম্পিউটারের উৎপাদন বছর ৫-৭ বছর পুরনো হার্ডওয়্যার সাধারণত আধুনিক সফটওয়্যার চালানোর জন্য উপযোগী নয়।

ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার থেকে কম্পিউটারকে সুরক্ষিত রাখতে এবং এগুলোর আক্রমণ ঠেকানোর জন্য আপনি নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:

  1. অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল ও আপডেট: ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করুন এবং তা নিয়মিত আপডেট রাখুন। এটি ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার স্ক্যান করে এবং বিপজ্জনক ফাইল চিহ্নিত করে সরিয়ে ফেলে।
  2. রিয়েল-টাইম প্রোটেকশন চালু রাখুন: বেশিরভাগ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারে রিয়েল-টাইম প্রোটেকশনের অপশন থাকে, যা অনলাইনে এবং অফলাইনে আপনার ডিভাইসকে ক্ষতিকর ফাইল থেকে সুরক্ষিত রাখে।
  3. সন্দেহজনক ইমেইল বা ফাইল এড়িয়ে চলুন: অপরিচিত বা সন্দেহজনক ইমেইল থেকে আসা লিংক ও অ্যাটাচমেন্টে ক্লিক করবেন না, কারণ এগুলোর মাধ্যমে ম্যালওয়্যার সহজেই ডিভাইসে প্রবেশ করতে পারে।
  4. ব্রাউজার এবং অপারেটিং সিস্টেম আপডেট রাখুন: ব্রাউজার এবং অপারেটিং সিস্টেম নিয়মিত আপডেট করুন। এতে সুরক্ষার জন্য নতুন প্যাচ ও সিকিউরিটি ফিচার যুক্ত হয়, যা ম্যালওয়্যার আক্রমণ ঠেকাতে সহায়ক।
  5. ফায়ারওয়াল চালু রাখুন: অপারেটিং সিস্টেমের ফায়ারওয়াল চালু রাখুন, যা অননুমোদিত প্রবেশের চেষ্টা আটকাতে সহায়ক। এটি ম্যালওয়্যার প্রবেশের ঝুঁকি কমায়।
  6. ব্যাকআপ রাখুন: গুরুত্বপূর্ণ ডেটার নিয়মিত ব্যাকআপ রাখুন। কোনো আক্রমণে ফাইল ক্ষতিগ্রস্ত হলে এটি ডেটা রিকভার করতে সাহায্য করবে।
  7. নিয়মিত স্ক্যান চালান: সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে পূর্ণ কম্পিউটার স্ক্যান করুন। অনেক সময় কিছু ভাইরাস চটজলদি ধরা পড়ে না, তাই স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে এদের শনাক্ত করা যায়।
এই পদ্ধতিগুলো মেনে চললে কম্পিউটার ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার থেকে নিরাপদ থাকবে এবং এর পারফরম্যান্সও ভালো থাকবে।


ডিস্ক স্পেস পূর্ণ হয়ে যাওয়া সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি

পদ্ধতি বিবরণ
অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে ফেলুন Disk Cleanup টুল ব্যবহার করে অস্থায়ী ফাইল, ক্যাশ ফাইল, এবং পুরনো সিস্টেম ফাইল মুছে ফেলতে পারেন। Recycle Bin খালি রাখুন।
বড় ফাইলগুলো খুঁজে বের করুন এবং সরান Windows Explorer এ সাইজ অনুসারে ফাইল ফিল্টার করুন এবং অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো অন্য ড্রাইভে সরান বা মুছে ফেলুন।
ফাইল ক্লাউড স্টোরেজে স্থানান্তর করুন Google Drive, Dropbox, OneDrive ইত্যাদিতে বড় ফাইলগুলো আপলোড করুন। এতে ডিস্ক স্পেস ফাঁকা থাকবে।
অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আনইনস্টল করুন সিস্টেমে ইনস্টল করা সফটওয়্যারগুলো পর্যালোচনা করে অপ্রয়োজনীয়গুলো আনইনস্টল করুন।
ডুপ্লিকেট ফাইল মুছুন CCleaner বা Duplicate File Finder এর মতো টুল ব্যবহার করে ডুপ্লিকেট ফাইল মুছে ফেলুন।
পুরনো ব্যাকআপ মুছে ফেলুন পুরনো ব্যাকআপ ফাইলগুলো মুছে ফেলুন যদি সেগুলোর আর প্রয়োজন না থাকে।
Optimize Storage ব্যবহার করুন (macOS) macOS-এর Optimize Storage ফিচারটি চালু করে অপ্রয়োজনীয় ফাইল সরিয়ে স্পেস ফাঁকা রাখুন।
SSD বা হার্ড ড্রাইভ আপগ্রেড করুন উচ্চতর ক্যাপাসিটির SSD বা হার্ড ড্রাইভ ইনস্টল করে অতিরিক্ত স্টোরেজ এবং উন্নত পারফরম্যান্স উপভোগ করুন।